শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

শুক্রবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের 1.1275 এবং 1.1424 রেঞ্জের মধ্যে অবস্থিত সাইডওয়েজ চ্যানেলের মধ্যেই ট্রেডিং অব্যাহত ছিল। মূলত, নতুন কিছু যোগ করার মতো নেই, কারণ শুক্রবারও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট উপেক্ষিত হয়েছে এবং এলোমেলো ও বিশৃঙ্খল মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। মার্কেটের পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। একমাত্র উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল 1.1275 লেভেল থেকে রিবাউন্ড, যা আমরা আগেই তুলে ধরেছিলাম। এই লেভেলটি সাইডওয়েজ চ্যানেলের নিম্নসীমা নির্দেশ করে, তাই এখান থেকে একটি ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট প্রত্যাশিত ছিল। তবে, এই পেয়ারের মূল্যের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেখা যায়নি, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজার এবং বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে ইতিবাচক ছিল। এপ্রিল মাসে ননফার্ম পেরোল ছিল 177,000, যেখানে পূর্বাভাস ছিল 130,000। বেকারত্বের হার 4.2%-এ অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে, একটি ছোট নেতিবাচক দিক ছিল: মার্চ মাসের NFP পরিসংখ্যান 228,000 থেকে কমিয়ে 185,000-এ সংশোধন করা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে, এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল নিরপেক্ষ ছিল, যদিও মার্কেটের ট্রেডাররা আরও নেতিবাচক ফলাফলের জন্য প্রস্তুত ছিল।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার 5-মিনিট টাইমফ্রেমে কোনো নির্ভরযোগ্য ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়নি। প্রথমত, তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এই পেয়ারের মূল্য একই রেঞ্জে আটকে আছে। দ্বিতীয়ত, এখনো এই পেয়ারের মূল্যের বিশৃঙ্খল মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে। মূল্য টেকনিক্যাল লেভেলের প্রতি কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না এবং মার্কেটের ট্রেডাররা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন উপেক্ষা করছে। তাই, মানসম্পন্ন সিগন্যাল পাওয়ার প্রত্যাশা করাটা কঠিন। যদিও দৈনিক ট্রেডিংয়ে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু এন্ট্রির সুযোগ তৈরি হতে পারে, তবে শুক্রবার সেরকম কোনো সুযোগ পাওয়া যায়নি।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনো EUR/USD পেয়ারের মূল্যের বুলিশ প্রবণতা বজায় রয়েছে। গত সপ্তাহের শুরুতে যে মুভমেন্ট দেখা গিয়েছিল, তা বাদ দিলে, এই পেয়ারের মূল্য তিন সপ্তাহ ধরে সর্বোচ্চ লেভেলের আশেপাশে একটি সাইডওয়েজ রেঞ্জে রয়েছে। মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো মার্কিন ডলার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতির প্রতি অত্যন্ত নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছে। তবে, যদি ট্রাম্প বাণিজ্য সংঘাত প্রশমনের দিকে অগ্রসর হন, তাহলে ডলারের দর কিছুটা বাড়তে পারে। কিন্তু তা আদৌ হবে কি না বা কখন হবে, তা এখনো অনিশ্চিত।
সোমবার, আবারও এই পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে, কারণ মার্কেটের সমস্ত কার্যক্রম এখনো ট্রাম্পের বিবৃতি এবং সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। যেহেতু সম্প্রতি ট্রাম্পের পক্ষ থেকে নতুন কিছু শোনা যায়নি, আমরা মনে করি এই পেয়ারের মূল্যের সাইডওয়েজ মুভমেন্ট অব্যাহত থাকবে। রেঞ্জের নিম্নসীমা (1.1275) থেকে একটি রিবাউন্ড হলে সেটি নতুন করে একটি ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু করতে পারে।
5-মিনিট টাইমফ্রেমে মনোযোগ দেওয়ার মতো লেভেলগুলো হলো: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1091, 1.1132–1.1140, 1.1189–1.1191, 1.1275–1.1292, 1.1330, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622, 1.1666, 1.1689। সোমবার ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নেই, এবং যুক্তরাষ্ট্রে কেবলমাত্র ISM সার্ভিসেস বা পরিষেবা সংক্রান্ত PMI প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি যে মার্কেটের ট্রেডাররা এখন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রতি খুব একটা প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।