শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট প্রায় EUR/USD পেয়ারের মতোই ছিল। এর কারণ হলো—মূল প্রভাবক একই ছিল। রাতের বেলায় ইরানের উপর ইসরায়েলের হামলার পর ডলারের দর হঠাৎ বৃদ্ধি পায়, তবে তা খুব দ্রুতই সেই প্রবণতার সমাপ্তি ঘটে, কারণ ট্রেডাররা মনে করছে যে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এই মুহূর্তে মার্কেটের প্রধান অগ্রাধিকার নয়। একমাত্র প্রকাশিত প্রতিবেদন হিসেবে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের কনজিউমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্সের ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি ভালো এসেছে, তবুও এটি ডলারকে কোনো সহায়তা দিতে পারেনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করছেন—এবার তার দৃষ্টি মধ্যপ্রাচ্যের দিকে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ইরানে হামলার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে, তবুও ট্রাম্পের বিবৃতি থেকে বোঝা যায় যে তিনি অন্ততপক্ষে বিষয়টি সম্পর্কে জানতেন। ট্রাম্প চাইছেন ইরান যেন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এবং পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। তেহরান এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। এরপর কী হবে? এবার কি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু হবে? কিন্তু ট্রাম্প তো বলেছিলেন, তিনি পৃথিবীর সব যুদ্ধ বন্ধ করতে চান? নাকি সেই অবস্থান এখন বদলে গেছে?
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবার তিনটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়। 1.3518–1.3535 এরিয়ায় মূল্য দুবার বাউন্স করে এবং দ্বিতীয়বারের প্রচেষ্টায় নিকটবর্তী টার্গেট 1.3580–1.3592 পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম হয়। ওই এরিয়া থেকে বাউন্সের ফলে সেল সিগন্যাল গঠিত হলেও সিগন্যালটি দিন শেষভাগে তৈরি হওয়ায় এটি কার্যকর হিসেবে বিবেচিত না-ও হতে পারে।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনো কেবলমাত্র ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে এবং তার গৃহীত নীতিমালার প্রতি ট্রেডারদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। আগের মতোই মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো সুযোগ পেলেই ডলার বিক্রি করছে, কিনছে না। যতদিন না মার্কেটে বাণিজ্য যুদ্ধের অবসানের বাস্তব কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায় এবং যতদিন না ট্রাম্প তার ক্ষমতার সীমার বাইরে গিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া বন্ধ করেন ততদিন এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার সামরিক উত্তেজনার বৃদ্ধি মার্কিন মুদ্রাকে কিছুটা সহায়তা করেছে ঠিকই, তবে আমরা মনে করি না এই বিষয়টি গত চার মাস ধরে ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা অন্যান্য বিষয়ের চেয়ে বেশি শক্তিশালী।
সোমবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতা বজায় থাকতে পারে। সবকিছু নির্ভর করবে ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধসংক্রান্ত বিবৃতি এবং ইসরায়েল-ইরান সংঘাত সম্পর্কে আসা খবরের ওপর।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচনাযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3421–1.3443, 1.3518, 1.3580–1.3592, 1.3652–1.3660, 1.3695, 1.3740। সোমবার যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন নির্ধারিত নেই, তবে সপ্তাহান্ত এবং সোমবারের মধ্যে অবশ্যই কিছু না কিছু খবর আসবে। আর সোমবার রাতেই নতুন করে এই পেয়ারের মূল্য "বৃদ্ধি" পেতে দেখা যেতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।