বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবারও GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় ছিল, যা গত দুই সপ্তাহ ধরে বিকশিত হচ্ছে। মনে করিয়ে দিই, সর্বশেষ মার্কিন ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছিল সেই সময় যখন ঘোষণা আসে যে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পারস্পরিক শুল্ক 115% হারে কমানো হবে। অনেকেই ভেবেছিল এর ফলে বাণিজ্যযুদ্ধ আরও প্রশমিত হবে, এবং সেটি হয়তো বাস্তবেও ঘটছে। তবে, এমন খবরও মার্কিন ডলারকে প্রকৃতপক্ষে কোনো কার্যকর সমর্থন দিতে পারেনি। এই সপ্তাহের সোমবার থেকে এখন পর্যন্ত ডলারের জন্য "নেতিবাচক" কোনো খবর আসেনি। মার্কিন ক্রেডিট রেটিং ডাউনগ্রেড অবশ্যই নেতিবাচক, তবে এটি এতটা ভয়াবহ নয় যে প্রতিদিন ডলারের দরপতনকে যৌক্তিক বিবেচনা করা যায়। সাম্প্রতিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটও মোটামুটি শান্ত ছিল—শুধু যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন ব্যতিক্রম, যা ডলারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করেছে। আমরা যা দেখছি তা খুবই স্পষ্ট: যেকোনো কারণেই ডলার বিক্রি করা হচ্ছে—এমনকি যখন কোনো কারণও না থাকে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার 5-মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়েছিল, তবে এর কোনোটিই খুব বেশি শক্তিশালী ছিল না। শুরুতে, যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশের পর পেয়ারটির মূল্য 1.3421–1.3440 এরিয়ার ওপরে কনসোলিডেট করে। সে সময় নতুন ট্রেডাররা লং পজিশন ওপেন করতে পারতেন, তবে ট্রেডাররা পাউন্ডের মূল্যের এই ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট দীর্ঘায়িত করতে ব্যর্থ হয়। পরে, একই এরিয়ার কাছাকাছি দুটি সেল সিগনাল গঠিত হয়, কিন্তু উভয় ক্ষেত্রেই কোনো কার্যকর ফলাফল আসেনি। দ্বিতীয় ট্রেডটি ব্রেকইভেনে ক্লোজ হয়, আর তৃতীয়টি ভুল সিগনালের পরিপ্রেক্ষিতে এক্সিকিউট করাই যুক্তিযুক্ত ছিল না।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
1-ঘণ্টার টাইমফ্রেমে, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনো ডোনাল্ড ট্রাম্পের পদক্ষেপ দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে এবং ট্রেডাররা তার নীতিমালার প্রতি প্রবল সংশয় প্রদর্শন করছে।। মনে রাখা দরকার: যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক হ্রাস মূলত ডলারের পক্ষেই কাজ করা উচিত ছিল, পাউন্ডের পক্ষে নয়। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সুদের হার কমিয়েছে এবং ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছে—তাতেও পরিস্থিতি ডলারের পক্ষেই থাকার কথা। অথচ, আমরা ঠিক উল্টো প্রতিক্রিয়া ও মূল্যের মুভমেন্ট দেখছি।
বৃহস্পতিবার আবারও মূলত টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর ওপর GBP/USD পেয়ারের ট্রেডিং নির্ভর করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো যেকোনো অজুহাতে ডলার বিক্রির সুযোগ খুঁজে বেড়াবে অথবা নতুন খবরের জন্য অপেক্ষা করবে। দিন যায়, দিন আসে—কিন্তু মার্কেটের সার্বিক পরিস্থিতিতে প্রকৃতপক্ষে কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।
৫-মিনিট চার্টে প্রাসঙ্গিক ট্রেডিং লেভেলগুলো হচ্ছে: 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3421–1.3443, 1.3537, 1.3580–1.3598।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র—উভয় দেশেরই সার্ভিস ও ম্যানুফ্যাকচারিং PMI প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে এগুলো ট্রেডারদের মধ্যে থাকা বুলিশ সেন্টিমেন্টে বিঘ্ন ঘটানোর সম্ভাবনা কম। বরং এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল সেই বুলিশ সেন্টিমেন্টকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।