বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের কোনো উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট দেখা যায়নি। জেরোম পাওয়েল যখন বলেন যে ট্রাম্পের শুল্কনীতির পূর্ণ অর্থনৈতিক প্রভাব মূল্যায়নের জন্য আরও সময় প্রয়োজন, তখন প্রত্যাশিতভাবেই মার্কিন ডলার কিছুটা শক্তিশালী হয়। কিন্তু সেই বৃদ্ধি কতটা ছিল? মাত্র ৫০ পিপস। বৃহস্পতিবার সকালে ব্রিটিশ পাউন্ড আগের রাতের সমস্ত দরপতন পুষিয়ে নেয়। আমরা আগেই এই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেছিলাম। প্রথমত, ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠক শেষ পর্যন্ত কোনো দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেনি, যদিও পাওয়েলের অবস্থান ট্রেডারদের প্রত্যাশার তুলনায় কিছুটা বেশি হকিশ বা কঠোর ছিল। দ্বিতীয়ত, ট্রেডারদের পূর্ণ প্রতিক্রিয়া দেখতে হলে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করা দরকার ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, ফেডের বৈঠকে আরেকটি হকিশ বা কঠোর অবস্থান থেকেও ডলার বাস্তবিক অর্থে সুবিধা করতে পারেনি। ফলে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ফ্ল্যাট থাকার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে এবং মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো ট্রাম্প বাণিজ্য সংঘাত বাড়াবেন না কমাবেন, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের চার্টে দিনজুড়ে 1.3329 এবং 1.3365 লেভেলের মধ্যে তিনটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। এই দুই লেভেলের মধ্যবর্তী দূরত্ব মাত্র ৩৫ পিপস, তাই এই রেঞ্জের মধ্যে বাউন্সের ভিত্তিতে ট্রেড ওপেন করা খুব একটা অর্থবহ ছিল না, কারণ সম্ভাব্য লাভের সম্ভাবনা লোকসানের চেয়ে কম ছিল। তবুও, তিনটি ক্ষেত্রেই মূল্য নিকটবর্তী টার্গেট লেভেল অতিক্রম করেছে, তাই যদি কোনো নতুন ট্রেডার এসব সিগন্যাল অনুসরণ করে পজিশন ওপেন করে থাকেন, তাহলে তারা কিছুটা হলেও লাভ করতে পেরেছেন। তবে মনে করিয়ে দিই, বর্তমান মার্কেটে আগের চেয়ে অনেক বেশি বিশৃঙ্খল ও এলোমেলো এবং তুলনামূলকভাবে অযৌক্তিক ও কাঠামোহীন মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনো শুধুমাত্র ডোনাল্ড ট্রাম্পের পদক্ষেপ দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে অনুসরণ। এর ফলেই পাউন্ডের মূল্য ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে, বা অন্তত একটি উচ্চ লেভেলে স্থির আছে। ভবিষ্যতে এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট সম্পূর্ণভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং তার সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে, অন্য কোনো বিষয়ের উপর নয়। ভবিষ্যতে হয়তো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রতি মার্কেটের ট্রেডারদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবে, তবে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো ইঙ্গিত নেই।
বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য যেকোনো দিকেই মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। এমনকি আসন্ন ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠকও মার্কেটে তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে নাও পারে, যেমনভাবে ফেডের বৈঠককে উপেক্ষা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ৫ মিনিটের চার্টে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং লেভেলগুলো হলো: 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3145–1.3167, 1.3203, 1.3259, 1.3329, 1.3365, 1.3421–1.3440, 1.3488, 1.3537, 1.3580–1.3598।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে, যেখানে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে—যা সপ্তাহের শুরু থেকেই জানা ছিল। যদি এই কারণেই ট্রেডাররা পাউন্ড বিক্রি করার প্রতি আগ্রহী হতো, তাহলে সেটি সম্ভবত ইতোমধ্যেই ঘটত।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।